Durga Puja

 বাঙালিরা যখন দুর্গাপূজা পালন করেন, তখন ভারতের কোথাও পালিত হয় দশেরা কোথাও বা নবরাত্রি। দশেরা কোথাও কোথাও পরিচিত দশহরা নামে, কোথাও বা দশাইন। কোনও কোনও জায়গায় একে বিজয়াদশমীও বলা হয়। আসলে দশেরা হল দেবীপক্ষের দশম দিন বা নবরাত্রির দশম দিন। এই দিন লঙ্কায় দশানন রাবণকে হারিয়ে রাম যুদ্ধ জয় করে সীতা উদ্ধার করেছিলেন। স্থানীয় ভাষায় দশহরা শব্দের অর্থও তা-ই। দশ মানে দশানন রাবণ, আর হরা মানে হার।

       


দশহরা শব্দটি এসেছে সংস্কৃত থেকেও। দশ + অহ = দশারহ = দশহরা। ‘অহ’ শব্দের অর্থ দিন। ৯ রাত্রি ১০ দিন ধরে অবিরাম লড়াইয়ের পর দেবী দুর্গা দশম দিনে মহিষাসুরকে বধ করেন। সুতরাং এই দিন দেবীর জয়ের দিন। সে জয় ভারতবাসী উদযাপন করে মা দুর্গার পুজো করে। কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড ও পশ্চিম বিহারে নবরাত্রির প্রথম দিনে মাটির টবে বার্লির বীজ পুঁতে দেওয়া হয়। বীজ থেকে যে অঙ্কুর বেরোয়, নয় রাত্রির পর দশম দিনে পুরুষরা তা তাঁদের টুপিতে পরেন বা কানের পিছনে লাগিয়ে রাখেন। এই অঙ্কুরকে সৌভাগ্যের প্রতীক ভাবা হয়। গোটা উত্তর ভারত ও মহারাষ্ট্রের একাংশে রামের সম্মানে দশেরা পালন করা হয়। রামের বিজয়ের দিনটি এঁরা পালন করেন রাবণ পুড়িয়ে। এ ব্যাপারে হিমাচলের কুলু দশেরা আলাদা করে উল্লেখের দাবি রাখে। কুলু শহরের ঢোলপুর ময়দানে যে মেলা বসে তাতে দেশ- বিদেশের পর্যটকরা ভিড় জামান। মহীশুরে দশেরা উদযাপন হয় মহিষাসুরমর্দিনীর বিজয়কে স্মরণ করে। এখানকার দশেরা মিছিলের খ্যাতি জগৎ জোড়া। দক্ষিণ ভারতের অন্যান্য সর্বত্রই বিজয়াদশমী পালিত হয়। তবে প্রতিটি জায়গাতেই সেখানকার অনুষ্ঠানের স্থানীয় ব্যাখ্যা রয়েছে।  


নবরাত্রির ধুম সব চেয়ে বেশি গুজরাতে। এখানে দশ দিন ধরে উৎসব চলে। মা অম্বা ও মা আশাপুরার পূজা হয় খুব জাঁকজমক করে। এর সঙ্গে বসে গরবা নাচের আসর।


শারদীয় নবরাত্রিক ব্রত পালন।


নবরাত্রি পূজা


নবরাত্রির ৯ দিনে দুর্গার কোন কোন রূপের পুজো হয়:-


১. শৈলপুত্রী- দুর্গার প্রথম রূপ শৈলপুত্রী। পর্বতরাজ হিমালয়ের কন্যা। এঁকে করুণা ও মমতার দেবী মনে করা হয়। ভক্তি ভরে দুর্গার এই রূপের পুজো করলে সুখ ও সিদ্ধি লাভ করা যায়।


২. ব্রহ্মচারিণী- এটি দেবী দুর্গার দ্বিতীয় রূপ। ব্রহ্মচারিণীর পুজো করলে যশ, সিদ্ধি ও সর্বত্র বিজয় লাভ করা যায়। শঙ্করকে স্বামী রূপে লাভ করার জন্য কঠোর তপস্যা করেন তিনি। তাই তিনি তপশ্চারিণী নামেও পরিচিত।


৩. চন্দ্রঘণ্টা- প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী সিংহে সওয়ার চন্দ্রঘণ্টার পুজো করলে ভক্তদের কষ্ট শেষ হয়ে যায়। চন্দ্রঘণ্টার পুজো করলে মনে শক্তি আসে এবং বীরত্ব লাভ করা যায়।


৪. কূষ্মাণ্ডা­- দেবী দুর্গার চতুর্থ রূপ কূষ্মাণ্ডা। কূষ্মাণ্ডার উপাসনা করলে সমস্ত রোগ-শোক মিটে যায়। এর ফলে আয়ু, যশ, বল ও আরোগ্য বৃদ্ধি হয়।


৫. স্কন্দমাতা- মনে করা হয় ভক্তদের সমস্ত মনোস্কামনা পূর্ণ করে দেবী দুর্গার এই রূপ। মোক্ষের দ্বার উন্মুক্তকারী দেবী হিসেবেও পূজিত হন স্কন্দমাতা।


৬. কাত্যায়নী­- দুর্গার এই ষষ্ঠ রূপকে উমা, হেমাবতী ও ঈশ্বরী নামেও জানা যায়। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী মহর্ষি কাত্যায়নের পুত্রী হিসেবে তাঁর নাম হয় কাত্যায়নী। মনে করা হয়, যে মেয়েদের বিয়েতে দেরি হয়, তাঁরা ইচ্ছামতো বর লাভের জন্য কাত্যায়নীর পুজো করেন।


৭. কালরাত্রি- দুর্গার সপ্তম রূপ কালরাত্রি। মনে করা হয় কালরাত্রির পুজো করলে অসুরের নাশ হয়। তাই দুর্গার এই রূপকে কালরাত্রি বলা হয়। এই দেবী সর্বদা শুভ ফল প্রদান করেন বলে শুভঙ্করীও বলা হয়।


৮. মহাগৌরী- এটি দুর্গার অষ্টম স্বরূপ। নবরাত্রির অষ্টম দিনে মহাগৌরীর পুজো হয়। তিনি শিবের অর্ধাঙ্গিনী। এদিন দুর্গাকে চুনরী দিলে সৌভাগ্য লাভ করা যায়। পাশাপাশি ভক্তদের কষ্টও দূর হয়।


৯. সিদ্ধিদাত্রী- নবরাত্রির সময় দুর্গার নবম রূপ হল মা সিদ্ধিদাত্রীর। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী সিদ্ধিদাত্রীর পুজো করলে আটকে থাকা কাজ পূর্ণ হয় এবং সমস্ত কাজে সিদ্ধি লাভ করা যায়।


৯. সিদ্ধিদাত্রী- নবরাত্রির সময় দুর্গার নবম রূপ হল মা সিদ্ধিদাত্রীর। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী সিদ্ধিদাত্রীর পুজো করলে আটকে থাকা কাজ পূর্ণ হয় এবং সমস্ত কাজে সিদ্ধি লাভ করা যায়।

Comments

Popular posts from this blog

Discover the Power of Palmistry and Astrology in Your Life

Sexual Orientation and Gender Identity LGBTQ+

Best Tantrik in Kolkata